চায়ে ও গল্পে গীতিকার অভিজিৎ পাল।



প্রশ্ন-বাংলা অরিজিনাল গান 'বিবাগী' ইউটিউবে ভাইরাল হলো এই নিয়ে তোমার বক্তব্য কি? এই গান তো তোমার লেখা?
অভিজিৎ পাল- খুবই ভালো অভিজ্ঞতা, আমরা কোনো রকম কোনো প্রমোশনস বুষ্ট করি নি, তা সত্ত্বেও এই গানটি যে মানুষ ইউটিউব এ দেখছে এটি দেখে খুব ভালো লাগছে।

প্রশ্ন-তোমার শিল্প জগতে প্রবেশ কিভাবে?
অভিজিৎ পাল- আমার একজন স্যার ছিল তার আন্দুলে বাড়ি, তিনি আমাকে লেখার জন্য অনুপ্রাণিত করতেন। সেই সময় আমাদের একটা ফ্যান কেনা হয়েছিল, সেই ফ্যানটা নিয়ে আমি একটা কবিতা লিখেছিলাম যদিও খুব বাজে কবিতা, কিন্তু সেই কবিতাটা পড়ে স্যার খুব ভালো এবং আমাকে সেদিন খুব উৎসাহ দিয়েছিলেন,আমি যখন মাধ্যমিক দেইনি তখন আমার প্রথম কবিতার বই প্রকাশিত হয়, এবং আজকাল খুব ভালো রিভিউ করেছিল, এইগুলি আমার কাছে একটা বড় পাওনা।

প্রশ্ন-বর্তমানে মিউজিক নিয়ে তোমার মতামত কি?
অভিজিৎ পাল-এখন সমস্তকিছু প্রোগ্রামিং হচ্ছে, লাইভ মিউজিক এখন স্টুডিওয় বাজে না। এখন সফটওয়্যার এর মাধ্যমে গলা চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে সংগীত হয় না। সংগীতের ধর্ম হচ্ছে, সমস্ত রাজ্য ,রাষ্ট্র ,ধর্ম মিশিয়ে দেবে একসাথে। সবাই মিলে কাজ করবে। আমি যে নতুন গানটি প্রডিউস করলাম। ওখানে আমি প্রজ্ঞা দত্ত বলে একটি নতুন মেয়েকে লঞ্চ করলাম, মেটিক কালনার মেয়ে, সদ্য পাঁচ-ছয় মাস হল ও আমাদের রবীন্দ্র ভারতী থেকে সংগীত কে নিয়ে মাস্টার্স করছে। ওর গান শুনে ওর গলা পছন্দ হলো এবং ওকে নিয়ে এলাম। ইন্দ্রজিৎ দে এর পুরো মিউজিক এরেন্জমেন্টের দায়িত্বে ছিল। আলোর গান বলে একটি গান আমি নিয়ে আসছি যেটি গেয়েছে  সিধু দা (সিদ্ধার্থ রায়) এবং যেটির মিউজিক অ্যারেঞ্জমেন্টের  দায়িত্বে রয়েছে নবারুণ বোস যে অনুপম রয় ব্যান্ডের লিড কিবোর্ডিস্ট।এই যে অনুশীলনটা চলছে এটাই তো আমরা চেয়েছিলাম। বাংলা গান হাতে হাত ধরে এভাবে এগোক, এটাই তো আমরা চেয়েছিলাম। এই যে তোমরা দূর থেকে এসেছো, এই যে আমি দূর থেকে এসেছি, এটা সম্পূর্ণ বাংলা গান, সাহিত্য,  ভাষা তথা সমগ্র বাংলা কে ভালোবেসে।


প্রশ্ন-দাদা তুমি তো একজন সাহিত্যকর্মী, বর্তমানে  ইউটিউব ব্লগ যেভাবে রাজত্ব করছে তাতে কি বাংলা বই কেউ পড়ছে?
অভিজিৎ পাল-বর্তমানে যেভাবে বই পাবলিস্ট হচ্ছে, ভালো বই গুলো চাপা পড়ে গেলে অনেক আজে বাজে বই সামনে চলে আসছে। দেখো বই কিন্তু সবসময় পড়তেই ভালো লাগে। কারণ নতুন বইয়ের যে গন্ধ সেটা তোমাকে মোবাইলের স্ক্রীন দিতে পারবে না। দেখো রবীন্দ্রনাথ সবকিছু করে দিয়ে গেছে আমরা যেটা করতে পারি সেটা হলো নতুন ভাবে প্রেজেন্ট করতে পারি।

প্রশ্ন- এই যে আমরা অনলাইনে এত সমালোচক দেখতে পাই। যাদের সেই রকম কোন বোধ শক্তি নেই তাদের সম্পর্কে তোমার কি ধারনা?
অভিজিৎ পাল- প্রথমেই আমি বলব দুম করে কিছু বলা উচিত না। এখন দেখতে হবে আমি ধরো কোন লেখা লিখছি, এবং ভাব প্রকাশ করার চেষ্টা করছি,কিন্তু আমার সেই ভাব প্রকাশ টা সুন্দরভাবে নাও হতে পারে কিন্তু আমি লেখাটা শুরু করেছি এবং লেখাটা আমার কাছে এসেছে,আমি ওনার হাতের আঙুল ধরে হাঁটা শুরু করেছি সেটা অনেক বড় ব্যাপার। সমালোচনা অনেক বড় জিনিস তো সমালোচনা না করলে ভালো লেখা আসবে না। কিন্তু এটা যিনি সমালোচনা করছেন তার গভীরতার উপরে নির্ভর করে। নচিকেতা যদি কারোর সমালোচনা করেন তাহলে বুঝতে হবে সে উতরে গেল।

প্রশ্ন- আচ্ছা যারা কবি তারা যদি সিনেমায় গান লেখা শুরু করে তবে সেটা নিয়ে অনেক সমালোচনা হয় এই ব্যাপারে তোমার কি মতামত?
অভিজিৎ পাল- কবিরা যদি গান লেখা শুরু করে তাহলে এর থেকে বড় সুখবর নেই, যারা বলার তারা সারাজীবন বলবে, যারা কাজ করার তারা সারাজীবন করবে।

প্রশ্ন-কিছুদিন আগেই একটি বাংলা সিনেমা আটকে দেওয়া হলো (ভবিষ্যতের ভূত)এই নিয়ে তুমি কি বলবে?
অভিজিৎ পাল- আমার মনে হয় রাজনীতির ক্ষেত্রে সাথে শিল্প ক্ষেত্র বা সিনেমার ক্ষেত্র না মেশানোই ভালো।

প্রশ্ন-নতুন যারা লিখতে চাইছে, তাদের উদ্দেশ্যে তুমি কি বলবে?
অভিজিৎ পাল-ফাটিয়ে লেখ, প্রতিদিন ভাবনায় ডুবে থাকো। যদি লেখা না মাথায় আসে বই পড়ো ম্যাগাজিন পড়ো খবরের কাগজ করো, অন্তত পড়ো।


Comments